রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় লায়লা আখতার ফরহাদের দায়ের করা মারধর ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ান জারির পরদিনই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচিত ও সমালোচিত ব্যক্তি টিকটকার প্রিন্স মামুন ওরফে আব্দুল্লাহ আল মামুন। আত্মসমর্পণের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৪ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালতে আত্মসমর্পণের পর জামিনের আবেদন করেন প্রিন্স মামুন। আদালত শুনানি শেষে এক হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন তার। আর বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন তার আইনজীবী মাজেদুর রহমান (সোহাগ)।
প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি, আত্মসমর্পণ ও জামিনে মুক্তির বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে উঠে আসার পর এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা চর্চা। একইসঙ্গে উঠে এসেছে বিভীষিকাময় এক রাতের কাহিনিও। লায়লার দায়ের করা মারধর ও হত্যাচেষ্টা মামলায় প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। গত ৩ জুন বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিজেই জানান প্রিন্স মামুন।
টিকটকার প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে লায়লা রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় ফৌজদারি বিধির ৩২৩, ৩০৭ ও ৫০৬ ধারায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর ০৫(১২)২০২৩)। পরবর্তীতে আইনি পদক্ষেপ হিসেবে আদালত থেকে প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এ ব্যাপারে সোশ্যাল মিডিয়ার পরিচিত মুখ প্রিন্স মামুন বলেন, গত ডিসেম্বরে মাঝরাতে লায়লা ও আমার দু’জনার মধ্যে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তখন উত্তেজিত হয়ে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। যা পরবর্তীতে মামলায় গড়ায়। বিষয়টি এখন আইনিভাবে মোকাবিলা করব আমি।
এছাড়া প্রিন্স মামুন বলেন, যিনি মামলা করেছেন তিনি বলেছিলেন মামলাটি তুলে নেবেন। এ কারণে আমিও আর আদালতে কোনো হাজিরা দেইনি। আর আদালতে হাজিরা না দেয়ার জন্যই আমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
এদিকে মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, তিন বছর আগে প্রিন্স মামুনের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয় লায়লার। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। দুই পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ের কথা চূড়ান্ত হয়। ওই সময় থেকেই প্রিন্স মামুন লায়লার বারিধারার ডিওএইচএসের বাসায় থাকা শুরু করেন।
এরপর প্রিন্স মামুন বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে লায়লার কাছ থেকে টাকা নিতেন। প্রায় সময়ই মাদক সেবন করে গভীর রাতে বাসায় প্রবেশ করতেন। বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় কথা বলতেন তিনি। এমনকি মাঝে মধ্যেই তাকে মারধর করতেন প্রিন্স মামুন।
গত ১১ ডিসেম্বর উত্তরায় একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠান থেকে বাসায় ফেরেন তারা। তখন মামুনসহ আরও দু’জন মদপানের জন্য মিরপুর যাওয়ার পরামর্শ করেন। তাদের মদপানে লায়লা নিষেধ করলে উত্তেজিত হয়ে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে প্রিন্স মামুন। আর গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে একপর্যায়ে লায়লাকে মারধর ও হত্যাচেষ্টা করে প্রিন্স মামুন।
সম্প্রতি এ ব্যাপারে টিকটকার প্রিন্স মামুনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশ। সোমবার (৩ জুন) পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করেন। আর তখন প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।