26 C
Dhaka
Friday, May 2, 2025

পরকীয়া জেনে যাওয়ায় শ্বশুরকে ধর্ষণ মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে পরকীয়ার ঘটনা জেনে যাওয়ায় শ্বশুর আহসান উল্লাহকে (৫৫) ধর্ষণের মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে পুত্রবধূর বিরুসোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন আহসান উল্লাহর স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যরা।

আহসান উল্লাহ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরপার্বতী ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আলী আহামদের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে আহসান উল্লাহর স্ত্রী হাছিনা আক্তার বলেন, আমার ছেলে প্রবাসে থাকার সুবাদে এক টিকটকারের সঙ্গে পুত্রবধূ পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। স্বামী বিদেশ থাকার সুবাদে ওই মেয়ে বারবার বিভিন্ন মানুষকে প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে।

যার নালিশ তার শ্বশুরের কাছে আসে, এ ব্যাপারে তার শ্বশুর তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে অপকটে স্বীকার করে বলে, ‘আপনার কী কোনো সমস্যা? একপর্যায়ে আমার ছেলের বউ তার পরকীয়ার কথা স্বীকার করে বলে, ‘হ্যাঁ আমি পরকীয়া করি। আপনার কোনো সমস্যা আছে? আমি বলে দিচ্ছি আমার এইগুলা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে আমি আপনাকে জেলের ভাত খাওয়াবো।’

আরও পড়ুনঃ  ‘শেখ হাসিনার পতনের পর স্বাধীনতার স্বাদ পেতে শুরু করেছি’

হাছিনা আক্তার বলেন, একপর্যায়ে আমরা তার এই অপকর্মের কথা আমার ছেলেকে জানালে ছেলে ধৈর্য ধরতে বলে, যেহেতু তার একটা মেয়ে সন্তান আছে। সন্তানের মায়া মমতায় পড়ে ছেলেটি তার স্ত্রীকে কড়া ভাষায় কিছু বলতেও পারেনি। কিন্তু চোখের সামনে পুত্রবধূর অপকর্মে বাধা দেওয়ায় আজ আমার স্বামীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করিয়েছে। আমরা গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রশাসনকে অনুরোধ করবো মিথ্যা এবং সাজানো ঘটনা তদন্তের মাধ্যমে এই পরকীয়া আসক্ত মেয়েটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আমরা ন্যায়বিচার চাই।

এদিকে পূত্রবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে শ্বশুরকে গ্রেপ্তারের পর এলাকায় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় বইছে। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একাধিক পোস্ট ও ভিডিওতে দেখা গেছে, শ্বশুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগকারী ওই গৃহবধূ টিকটক ব্যবহার করেন। টিকটকের সূত্রে স্থানীয় আরেক টিকটকার যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের একসঙ্গে করা একাধিক টিকটক ভিডিও রয়েছে। এসব ভিডিওর কোনোটিতে ওই যুবক তাকে ঘড়ি পরিয়ে দিচ্ছেন, কোনোটিতে একে অপরের হাত ধরে আছেন।

আরও পড়ুনঃ  দিল্লির একটি হাসপাতালে কাল রাতেই হাসিনার মৃত্যু! যা জানা গেল

তবে শ্বশুরকে ফাঁসানোর অভিযোগ অস্বীকার করে ওই গৃহবধূ বলেন, যার সাথে টিকটক করেছি, সে আমার পাশের বাড়ির মামা। তার সাথে আমার কোনো পরকীয়ার সম্পর্ক নেই। আমাকে অপবাদ দিতেই এমন অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পুত্রবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে শ্বশুর আহসান উল্লাহকে (৫৫) রোববার (১৬ মার্চ) বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে গত সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করে পুত্রবধূ। অভিযোগ পেয়ে শনিবার (১৫ মার্চ) রাতে উপজেলার চরপার্বতী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ বাড়ি থেকে আহসান উল্লাহকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আরও পড়ুনঃ  আসিফ মাহমুদের বইয়ে ‘মাইনাস সাদিক কায়েম’, নেট দুনিয়ায় বিতর্কের ঝড়

মামলা সূত্রে জানা যায়, ওই গৃহবধূর স্বামী দুবাই প্রবাসী। তিনি তার এক সন্তান নিয়ে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে একই বাড়িতে বসবাস করেন। শ্বশুর আহসান উল্লাহ বিভিন্ন সময় পুত্রবধূকে কুরুচিপূর্ণ কথাসহ খারাপ কাজের ইঙ্গিত দেন। ভুক্তভোগী বিষয়টি স্বামী ও শাশুড়িকে জানালেও তারা বিষয়টি কর্ণপাত করেননি।

গত সোমবার রাত ১০টার দিকে ভুক্তভোগী প্রতিদিনের ন্যায় নিজের কক্ষে কন্যা সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সেহেরি খাওয়ার পূর্বে শ্বশুর কৌশলে পুত্রবধূর কক্ষে প্রবেশ করেন। ওই সময় তিনি পুত্রবধূকে ঘুমন্ত অবস্থায় ধর্ষণ করেন। ভুক্তভোগী চিৎকার করতে গেলে শ্বশুর তার মুখ চেপে ধরেন, ধর্ষণ করে দ্রুত রুম থেকে বের হয়ে যান। পরে ভুক্তভোগী গৃহবধূ বিষয়টি তার স্বামী-শাশুড়িকে জানান এবং নিজেই বাদী হয়ে এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

আপনার মতামত লিখুনঃ
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ