25 C
Dhaka
Monday, December 23, 2024

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডিআইজি হারুন?

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণরোষের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতির নিকট পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। এরপর বঙ্গভবন থেকেই হেলিকপ্টারে দেশ ছাড়েন।

কোটা সংস্কার আন্দোলন দমন করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

ডিবি হেফাজতে থাকা অবস্থায় বিভাগের প্রধান হারুনের নির্দেশে সমন্বয়কদের জোর করে খাবার টেবিলে বসিয়ে ভিডিও করা হয়। সমন্বয়কদের ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিবারকে ডেকে ১৩ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয় এবং আন্দোলন প্রত্যাহারের মিথ্যা ঘোষণা দেওয়া হয় মিডিয়ায়। তাই শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর হারুন এখন কোথায় আছেন তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।

জানা গেছে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লে– লাখো জনতা ওইদিন দুপুর থেকে নেমে আসে ঢাকার রাজপথে। ঢাকার যাত্রাবাড়ী, পুরান ঢাকা, পোস্তগোলা দিয়ে প্রথমে শহীদ মিনার ও পরে গণভবনের উদ্দেশ্যে ঢলে অনেকে সচিবালয় ও বঙ্গবাজারের সড়ক দিয়ে এগোতে থাকেন।

আরও পড়ুনঃ  রেহানা ফিরছেন লন্ডন, হাসিনাকে না, অস্বস্তিতে টিউলিপ

ডিএমপির সেন্ট্রাল কমান্ড ও কন্ট্রোল ইউনিট ভবনের সামনে থাকা বঙ্গবন্ধুর বিশাল ব্যানার টানানো দেখে উত্তেজিত জনতা ভবনটিকে উদ্দেশ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এর মধ্যেই পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ব্যানারটি সরিয়ে ফেলা হয় ও সামনের মূল ফটক আটকে দেয়া হয়।

তবে জনতা ভবনটির প্রাঙ্গণে ঢুকতে না পারলেও– বাইরে থেকে মুর্হমুহু ইট মারতে থাকে। প্রাণভয়ে এর মধ্যেই অনেক পুলিশ কর্মকর্তা তাদের ইউনিফর্ম খুলে ফেলেন। গেঞ্জি বা অন্য কোনো পোশাক পরে সেন্ট্রাল কমান্ড ও কন্ট্রোল ইউনিট ভবনের পেছনের প্রায় ১৩ ফুট দেয়াল টপকে পুলিশ সদর দপ্তরের সামনের রাস্তায় পড়েন।
ঠিক একই কায়দায় দেয়াল টপকাতে গিয়ে পায়ে ও শরীরের নিচের অংশে ব্যাপক আঘাত পান ডিআইজি হারুন অর রশীদ। পরে সেখান থেকে তিনি আইজিপির সঙ্গে চলে যান পুলিশ সদর দপ্তরে।

আরও পড়ুনঃ  প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের শাস্তি চাইলেও বিসিএস বাতিল চান না সারজিস

বিকেলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে আবারও পুলিশ সদর দপ্তর লাগোয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দেয়াল টপকে কোন রকমে প্রাণে বেঁচে ফিরেন হারুন। ওইদিন রাতে তিনি কোথায় ছিলেন সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।

তবে পুলিশের একটি সূত্র বলছে, তিনি কূটনৈতিক এলাকায় একটি দূতাবাসে/হাইকমিশনে আশ্রয় নেন।

২০০৬ সালে ডিভি লটারিতে আমেরিকার ভিসা পান হারুনের স্ত্রী। বৈধ ভিসা থাকায় সেই সূত্রে আমেরিকা পালানোর চেষ্টা করেন তিনি। যোগাযোগ করেন মার্কিন দূতাবাসেও, নিশ্চয়তা চান তাকে অক্ষত অবস্থায় বিমানবন্দরে বিমানে তুলে দিয়ে আসার। তবে কূটনৈতিক সূত্র জানায়, তার প্রস্তাব নাকচ করে দেয় দূতাবাস। পরে তিনি সেখান থেকে ফিরে আসেন।

আরও পড়ুনঃ  আওয়ামী লীগ ছেড়ে ইউপি সদস্য বললেন, ‘আমি বিএনপির লোক’

এরপর বিকেলে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সোয়াটের একটি গাড়ি তাকে মিরপুরের দিকে একটি জায়গায় দিয়ে আসে। সেখানে কিছু ব্যক্তির সাথে আলাপ করে– বিমানবন্দর দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন হারুন। গাড়িতে করে পৌঁছেও যান বিমানবন্দরে।

তবে বিমানবন্দের টার্মিনালে প্রবেশের আগেই জনতা তাকে দেখে চিনে ফেললে, মারধরের শিকার হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া রাজধানীর একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে। সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হারুন সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।

যদিও হারুনের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।

আপনার মতামত লিখুনঃ
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ