চাকরি জাতীয়করণসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন আনসার সদস্যরা।
স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আমরা তিন উপদেষ্টা এবং অন্যান্য সহকর্মী সবার সাথে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, এখন থেকে আনসারে কোনো ‘রেস্ট প্রথা’ থাকবে না।
রোববার বিকেলে সচিবালয়ে আন্দোলনরত আনসার সদস্যদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে তিনি এ সিদ্ধান্তের তথ্য জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, একই সঙ্গে অন্যান্য দাবি-দাওয়াগুলো নিয়ে একটি কমিটি করা হবে। এই কমিটি সবকিছু পর্যালোচনা করে আমাদের কাছে প্রতিবেদন পাঠাবে। সেই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আমরা একটি সিদ্ধান্ত নেব।
আনসারে ‘রেস্ট প্রথা’ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতি তিন বছর চাকরির পর আনসার সদস্যদের ছয় মাস রেস্টে থাকা লাগে। এই ছয় মাস পর তারা আবার জয়েন করেন।
এই ছয় মাস তাদের খুব মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। নিয়োগ বিধিমালা থেকে এই প্রথা বাতিল করে কীভাবে তাদের চাকরিতে রেগুলার করা যায়, সে প্রক্রিয়ায় কাজ করা হচ্ছে। সাধারণ আনসারদের মধ্যে চারজন প্রতিনিধি নিয়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে তারা একটি সুপারিশ দেবেন।
এ সময় তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, যেহেতু একটি কমিটি হয়েছে, সেহেতু বিচার-বিশ্লেষণ করে একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমাদের একটি জাতীয় সংকট চলছে।
আমাদের অনেকদিকে কাজ করা লাগছে। এই দুর্যোগকালীন সময়েও এই সুপারিশ কমিটি সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেবে। আনসার ভাইদের যে সমস্যা, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করে একটি যৌক্তিক সমাধানে আমরা পৌঁছাব। তবে, প্রাথমিকভাবে তাদের ‘রেস্ট প্রথা’ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার আশ্বাসের পর আন্দোলন স্থগিত করেছে আনসার সদস্যরা। আনসার জাতীয়করণ আন্দোলনের সমন্বয়ক নাসির মিয়া বলেন, ‘আন্দোলন স্থগিত করা হচ্ছে। সবাই কাজে ফিরে যাবে।’
চাকরি জাতীয়করণসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন আনসার সদস্যরা। তাদের এ আন্দোলনে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট তৈরি হয়। সাধারণ মানুষ পড়েন ব্যাপক ভোগান্তিতে।
রোববার আন্দোলনের এক পর্যায়ে আনসার সদস্যরা বাধা উপেক্ষা করেই প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে ঢুকে পড়েন। এ সময় তারা দাবি আদায়ে নানা স্লোগান নিতে থাকেন। পরে তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।