25 C
Dhaka
Monday, December 23, 2024

হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে রাইসি নিহত: যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করছে রাশিয়া

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির প্রাণহানির ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। মঙ্গলবার কাজাখস্তানে এক বাণিজ্য সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের বিমান চলাচলের নিরাপত্তা আরও খারাপ হয়েছে।

এর আগে, রোববার ইরানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় এক পার্বত্য অঞ্চলে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ ৯ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। এই দুর্ঘটনায় রাইসিহহ হেলিকপ্টারের সব আরোহীই নিহত হয়েছেন।

ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বেল ২১২ মডেলের। সোমবার সকালে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের পাহাড়ি ও তুষারাবৃত এলাকায় হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় উদ্ধারকারী দল। তবে ইরানের সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও কারণ জানানো হয়নি।

আরও পড়ুনঃ  ৭ দিন পরই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে নরওয়ে

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, হেলিকপ্টারটির বয়স কত ছিল তা স্পষ্ট নয়। তবে এই মডেলটি কানাডিয়ান সামরিক বাহিনীর জন্য ১৯৬০-এর দশকে তৈরি করা হয়েছিল। ১৯৭৯ সালের ইরানি বিপ্লবের পর তেহরানের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার দশক শুরু হয়েছিল। ওই সময়ের পর ইরানের কাছে কোনও সামরিক অস্ত্র বিক্রি করেনি যুক্তরাষ্ট্র।

১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের আগে শাহের শাসনামলে বেল হেলিকপ্টারের অন্যতম প্রধান ক্রেতা ছিল ইরান। যদিও বিধ্বস্ত বিমানটির সঠিক উৎস সম্পর্কে পরিষ্কার হওয়া যায়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক দশকের নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের জন্য বেল ২১২ হেলিকপ্টারের যন্ত্রাংশ কেনাকাটা কিংবা মেরামত করা কঠিন হয়ে পড়েছিল।

আরও পড়ুনঃ  ইমরান খানের সুখবর, আরও দুই মামলায় খালাস

রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার বিষয়ে লাভরভ বলেন, ‌‌‘‘আমেরিকানরা এটি অস্বীকার করে। কিন্তু সত্যিটা হলো, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে। এর ফলে তারা বিমান বিমান চালনাসহ মেরামতের জন্য আমেরিকার তৈরি করা বিভিন্ন খুচরা যন্ত্রাংশ পায় না।’’

রাইসিকে বহনকারী বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি
তিনি বলেন, ‘‘আমরা নির্বিচারে সাধারণ নাগরিকদের ক্ষতির বিষয়ে কথা বলছি; যারা এসব যানবাহন ব্যবহার করে। যখন খুচরা যন্ত্রাংশ সরবরাহ করা হয় না, তখন এটি সরাসরি নিরাপত্তার স্তর লঙ্ঘন করে।’’

আরও পড়ুনঃ  দুই স্ত্রী থাকলে আপনি পাবেন ২ লাখ

ফ্লাইট গ্লোবালের ২০২৪ সালের ওয়ার্ল্ড এয়ার ফোর্সেস ডিরেক্টরি অনুযায়ী, ইরানের নৌ ও বিমানবাহিনীর বহরে বেল ২১২ মডেলের মোট ১০টি হেলিকপ্টার রয়েছে। তবে ইরানের সরকার এসব হেলিকপ্টারের মধ্যে কতটি পরিচালনা করে আসছে তা পরিষ্কার নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এই হেলিকপ্টার যেকোনও ধরনের উদ্দেশে ব্যবহার করা যায়। মানুষ ও মালামাল পরিবহনের পাশাপাশি যুদ্ধের সময় অস্ত্র সরঞ্জাম বহন এবং ব্যবহারও করা যায়।

ইরানে সর্বশেষ বেল ২১২ মডেলের একটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল ২০১৮ সালের এপ্রিলে। ওই সময় হৃদরোগে আক্রান্ত এক রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে বিধ্বস্ত হয় হেলিকপ্টারটি।

সূত্র: রয়টার্স, এএফপি।

আপনার মতামত লিখুনঃ
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ